এক.
আমার মৃত্যুর জন্যে কেউ দায়ী নয়
ব্যর্থরাষ্ট্র, নগ্নধর্ম, পতিত সমাজ
নও তুমি
জন্মভূমি;
অভাব বিজয়
অন্তর্দাহে ভীরুমন এতো যুদ্ধবাজ!
প্রতিবাদী অভিমান, সার পাই
নাই
প্রেম, ভিটেমাটি কেড়ে নেয়নি ভূস্বামী।
আমার মৃত্যুর জন্যে একমাত্র আমি
দায়ী। দ্ব্যর্থহীনভাবে আজ শাস্তি চাই!
দুই.
কবিতাটি আত্মহত্যা করবার আগে
বলে গিয়েছিল তার দুঃস্বপ্নের কথা
নগ্ন আবেগযন্ত্রণা; কষ্ট অনুপ্রাস
তোলে বিরহসঙ্গীত — ব্যর্থ অনুরাগে
রূপক উপমাক্রোধ, নষ্ট চিত্রকল্প
অমলিন বয়ে যায় বুকপকেটের
অন্তর্জালে, কটাদিন কুলঙ্গিযাপন
বাকি থাকে ছাই, ঘরে না-ফেরার গল্প।
অশ্রুসজল ব্রীড়া যে উপক্রমনিকা,
ভাগাড়ে খুঁজছে ঠাই ছিন্ন যবনিকা।
তিন.
ডিমপাড়া শেষে সারি-বিসারী স্যামন
মাছ দলবেঁধে আত্মহত্যা করে।
তাদেরকে তার আগে পর হতে হয়
কয়েক হাজার দুর্গম জলপথ,
শীতঘুম দিতে যাওয়া মা-ভাল্লুক
চালায় চিরনি অভিজান ; অজস্র
অসচ্ছ মিঠেপানির খাড়াই পারে
চিরবিশ্রাম। তবে ফিরতি পথের
ভাসমান নাড়িকাটা মৃত স্যামনের
প্রতিভাস স্রোত মৃত্যুগুলোকে আরো
কিছুটা সময় কি প্রলম্বিত করে?
চার.
হে মৃত্যু
ও মৃত্যু
মৃত্যুজীবনে বন্ধু স্বাগতম
আহ মৃত্যু
বাহ মৃত্যু
অনুপম সে না বড় মনোরম
তথাপি মৃত্যু
এবং মৃত্যু
মৃত্যুমারী দেখে অপ্রস্তুত জম
আর মৃত্যু
আহা মৃত্যু
মৃত্যু মৃত্যু ও মৃত্যু ডট কম
পাঁচ.
আমি যেন সরকারি বন্ধের দিন মারা যাই। আত্মীয়-বন্ধুরা নৈমিত্তিক ছুটি যাতে নিতে না-হয়। ইদ বা পূজার ছুটিতে মৃত্যু এলেও খারাপ হয় না। বংশধরেরা থেকে যাবে নির্দ্বিধায়। মর্গের বরফে বেশিদিন বাঁচতে চাই না। অনন্ত হাসপাতালে চাই না পরে থাকতে–প্রবাসী আবেগে। কোথা থেকে টাকা আসবে, কে দৌড়াবে ডাক্তারখানা! লাইনে দাঁড়াবে–রক্তমূত্র নিয়ে, ঘুমহীন রাত জাগা। মুমূর্ষু চিৎকার, নার্সখিস্তি, ডাক্তারখেউড়, ওষুধদুর্গন্ধের আগে চলে যেতে চাই।
আমি যেন ঝড়ের রাতে মারা যাই। কান্না না আসা নিয়ে কেউ যেন কোন বিড়ম্বনায় না পড়ে!